বাংলা নামে যে একটি সমৃদ্ধ ভাষা আছে এই ভাষায় যে রচিত হতে পারে বিশ্ব মানের সাহিত্য, গল্প, কবিতা, উপন্যাস, এ কথা বিশ্ববাসীকে সর্বপ্রথম জানান দিয়েছিলেন বাঙালীর প্রাণ পুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর দীর্ঘ যুগ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায বাঙালী পেয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়, অভ্যূদয় ঘটেছে বাংলাদেশের। এই বাঙালী, বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা বিশ্বের বুকে সামগ্রীক পরিচয় তুলে ধরেছে এটিএন বাংলা।
স্যাটেলাইট এই দেশে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় ১৯৯৫ সালে, নতুন প্রযুক্তি, নতুন ধরণের বিনোদন। এদেশের মানুষ হুমড়ী খেয়ে পড়ে বিদেশী সংস্কৃতির টিভি চ্যানেলগুলোতে। বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো কোনো বাংলা স্যাটেলাইট চ্যানেল তখনও ছিলো না। চারিদিকে শুধু বিদেশী ভাষা আর সংস্কৃতির দাপট। আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন ভিন্ন শিক্ষায় বেড়ে উঠছিল।
১৫ই জুলাই ১৯৯৭, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বলতম দিন। বিশ্বব্যাপী প্রথম বাংলাভাষা সম্প্রচার ঘটলো স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলার মাধ্যমে। তীক্ষ দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তাশীল ভবিষ্যৎ প্রবক্তা ড. মাহফুজুর রহমান মাত্র গুটি কয়েক তরুণকে নিয়ে দিনের পর দিন পরিশ্রম আর অসাধ্য সাধনে নিয়োজিত হলেন। তিনি স্যাটেলাইটে পৌছে দিলেন বাংলা বিনোদন “মোদের গরব মোদের আশা, আ-ম-রি বাংলা ভাষা”, সারা বিশ্বের সকল মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার, দুপুর ১২টা ৩০মিনিট থেকে ৩ ঘন্টাব্যাপী সাপ্তাহিক ইসলামী অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। আজ ইসলামী অনুষ্ঠান অধিকাংশ মানুষকে উজ্জীবিত করেছে কোরআন ও সুন্নাহ্র আলোকে জীবন গড়তে।
১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ পরিকল্পনা আর যত লক্ষ্য করা গেল এটিএন বাংলায়। মে’ ১৯৯৯ পরিবর্তন ঘটলো প্রযুক্তিতে। এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তর হলো সম্প্রচার কার্যক্রম। মিলেনিয়াম ২০০০ বিশ্বব্যাপী বাংলা সংস্কৃতি প্রচার-প্রসারে এক নবদিগন্ত উম্মোচিত করলো এটিএন বাংলা তার ইউরোপ সম্প্রচারের মাধ্যমে। ১৬ই আগষ্ট ২০০১ এটিএন বাংলা শুরু করে সংবাদ প্রচার আর ইংরেজী সংবাদ প্রচার শুরু হয় ১লা অক্টোবর ২০০২। ২০০৩ এর ডিসেম্বরে এটিএন বাংলায় তারুণ্য দীপ্ত ২৪জন টিভি সংবাদ কর্মী যোগদান করেন। একই বছর ইরাক যুদ্ধের উপর বিশেষ বুলেটিন দিয়ে শুরু হয় প্রতি ঘন্টার সংবাদ সম্প্রচার। ফলে এটিএন বাংলার সংবাদ হয়ে উঠে দেশের সেরা খবরের পিঠস্থান।
এটিএন বাংলার ইতিহাস হয়তো একদিন রূপকথার মত শুনাবে, শুনাবে এর স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মাহফুজুর রহমানের কথা। ৮ বার জাতীয় রপ্তানী ট্রফি জয়ী ড. মাহফুজুর রহমান তাঁর স্বপ্নের প্রত্যক্ষ রূপ দিলেন, ছোট পর্দার অস্কার খ্যাত এ্যামি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করে ছোটদের তৈরী “আমরাও পারি” অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২২শে নভেম্বর ২০০৪ সালে । ১৪ই মে ২০০৫ এবার শুরু করলেন স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রতিভা অন্বেষণ, যার শুরু ছিল “নবীন বরণ ও শাপলা শালুক গোল্ড মেডেল” প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। এরপর এটিএন তারকা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সঙ্গীত ও নাটকে ১০ জন করে ২০ জন শিল্পী তুলে আনে এটিএন বাংলা। ২০০৬ সালে এশিয়া অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক এ্যামি এওয়ার্র্ড লাভ করে এটিএন বাংলা। মাহফুজুর রহমান এবার চাইলেন এটিএন বাংলাকে সরাসরি পৌছে দিতে সুদূর অষ্ট্রেলিয়ায়। স্বাক্ষর করলেন অষ্ট্রেলিয়া সম্প্রচারের চুক্তি । যার বাস্তবায়ন ঘটে ১লা আগষ্ঠ ২০০৭, এবছর ৪র্থ বারের মত এটিএন বাংলা এ্যামি’এ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন পেলো ছোটদের জন্য নির্মিত “বাঁচার আশা” ডকুড্রাামার মাধ্যমে।
২০০৭ সালে বাংলাদেশের স্যাটেলাইটের প্রবক্তা পেলেন আরো যশ আরো খ্যাতি, সম্মান সূচক বিশ্বখ্যাত মাদার তেরেসা, অতীশ দীপঙ্কর পদক, মহাত্মা গান্ধী রিচার্স কাউন্সিল পদক, চাইল্ড ওয়েলফেয়ারসহ বহু পদক প্রাপ্ত হন ড.মাহফুজুর রহমান এবং এটিএন বাংলা। এবছরই দেশের সেরা চ্যানেল হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের স্থান করে নেয় “মিট দ্য প্রেস” এবং লিড নিউজ “ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরাম” জরিপে। ২০০৭ সালে এটিএন বাংলা শুরু করলো বাংলাদেশের আরেক ইতিহাস,“বি-লিগ ফুটবল খেলা, যা বাংলাদেশে প্রথম পেশাদার ফুটবল লিগ” তার সরাসির সম্প্রচার ঢাকা ষ্টেডিয়াম থেকে।
২০০৮ সাল, রাজনীতি, অর্থনীতি, সরকার ছাড়াও ঘরে বাইরে সমালোচকদের আলোচনার মূখ্য বিষয় এটিএন বাংলা এবং তার নিরপেক্ষ সংবাদ ও সাজানো গুছানো অনুষ্ঠানমালা। এবছর এটিএন বাংলা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে লন্ডন থেকে বৈশাখী মেলা ও কনসার্ট সরাসির সম্প্রচার করে। একই বছর উপমহাদেশের দুই কিংবদন্তী সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব বাপ্পী লাহিড়ী ও মান্না দে ঢাকায় আসেন এটিএন বাংলার আমন্ত্রণে। ২০০৮ এটিএন বাংলা নিজেকে ধন্য ও সমৃদ্ধ করে ‘সাদা মনের মানুষ’ এর সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে। একই বছর আলোড়ন সৃষ্টি করে ‘ম্যাজিক তিন চাকার তারকা’ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ রিক্সাওয়ালাদের সঙ্গীত প্রতিযোগিতা আযয়োজন করে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশী বিদেশী ইভেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাটেক্সপো নাইটস্, থিম পার্ক নন্দনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন কনসার্ট, সনু নিগম কনসার্ট এবং ইত্তেফাক-ফ্যান্টাসী কিংডম তথা কনকর্ডের সঙ্গে বিউটি কনটেষ্ট ষ্টাইল আইকন ২০০৮ এর আয়োজন উল্লেখযোগ্য। আর ২০০৮ সালে বহুল প্রতিক্ষীত জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ডজন খানেক ষ্টুডিও ব্যবহার করে প্রচার ও ফলাফল প্রকাশ ছিল অন্যতম প্রশংসার দাবিদার।
news
talk show
comedy show
natok
music video
etc etc